৫ গিগাহার্টজ ওয়াই-ফাই ২.৪ গিগাহার্টজ ওয়াই-ফাই থেকে দ্রুতগতির। এর মূল কারণ কোরা ডটকমে বর্ণনা করেছেন মাইক্রোসফটের অ্যাজুর হার্ডওয়্যার আর্কিটেকচারের মুখ্য প্রকল্প ব্যবস্থাপক অ্যান্ড্রু সিলভারম্যান। তিনি জানান, অনেকেই ২.৪ গিগাহার্টজের চেয়ে ৫ গিগাহার্টজের ওয়াই–ফাই ফ্রিকোয়েন্সিকে দ্রুত গতিসম্পন্ন বলে মনে করেন। কারণ ২.৪ সংখ্যার চেয়ে ৫ সংখ্যাটি বড় বা বেশি। তাঁদের ধারণা সঠিক হলেও যে কারণে তাঁরা এই ধারণা পোষণ করেন তা ছাড়াও ৫ গিগাহার্টজ ওয়াই-ফাইয়ের গতি বেশি থাকার বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
সিলভারম্যানের তথ্যমতে, উচ্চগতির ফ্রিকোয়েন্সির আনমডুলেটেড তরঙ্গ বেশি তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। ৫ গিগাহার্টজের ফ্রিকোয়েন্সিতে যন্ত্রের পূর্ণ অ্যাকসেস থাকলে বেশি গতি পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হলেও আসলে তা হয় না। একই তরঙ্গের বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহার রোধ করতে তরহীন স্পেকট্রামকে অনেক ব্যান্ডে বিভক্ত করা হয়। আনমডুলেটেড ক্যারিয়ার ওয়েভে ফ্রিকোয়েন্সি, বিস্তৃতি বা ফেজ পরিবর্তনের (মডুলেশন) মাধ্যমে তথ্য পাঠানো হয়। অন্য কথায়, ফ্রিকোয়েন্সি, অ্যাম্প্লিচিউট, আর ফেজ ভেরিয়েশন করে তথ্য পরিবহন করা হয়। ওয়াই–ফাই সংকেতের কার্যক্ষমতার ভিত্তি ফ্রিকোয়েন্সি নয়, বরং চ্যানেলের বিস্তৃতির ওপর সব নির্ভর করে। মূল বিষয় হচ্ছে, আপনার একটি চ্যানেলে ২০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডউইথ থাকে তবে তা ২.৪ গিগাহার্টজ বা ৫ গিগাহার্টজ রেঞ্জের মধ্যে তা বিবেচ্য নয়। বিষয়টি রেডিও ও টিভি চ্যানেলের মতো। এখানে তরঙ্গের ইন্টারফেরেন্স বা হস্তক্ষেপ রোধ করার জন্য বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি আলাদা করা হয়। চ্যানেল ৫-এর তুলনায় চ্যানেল–২ ভালো তথ্য পরিবহন করবে উচ্চতর ফ্রিকোয়েন্সির জন্য নয়, তরঙ্গের পরিসর গুরুত্বপূর্ণ এ ক্ষেত্রে।
২.৪ গিগাহার্টজ ও ৫ গিগাহার্টজের কাজের ধরনেও পার্থক্য আছে। ২.৪ গিগাহার্টজের বেশির ভাগ চ্যানেল বেশি ব্যবহৃত হওয়ায় গতি কিছুটা কমে যায়। অপরদিকে ৫ গিগাহার্টজের ওয়াই–ফাই সংকেতে বেশি চ্যানেল থাকে, যা ওভারল্যাপ করে না। এর ফলে প্রতিটি চ্যানেল ২.৪ গিগাহার্টজের চ্যানেলের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি ব্যান্ডউইথে চলে। ৫ গিগাহার্টজের চ্যানেল বেশ বিস্তৃত। এখন অনেক নতুন ওয়াই–ফাই সিগন্যাল যেমন ৮০২.১১এসি ডেনসলি প্যাকড মডুলেশন স্কিম ব্যবহার করে। একাধিক চ্যানেলে একাধিক স্ট্রিম ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে একসঙ্গে অনেক যন্ত্রে বেশি মাত্রায় তথ্য পাঠানো যায়। প্রকৃতপক্ষে ৮০২.১১এসি মান শুধু ৫ গিগাহার্টজ তরঙ্গে ব্যবহার করা হয়। ২.৪ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে কাজ করে না। পূর্ববর্তী সংস্করণ ৮০২.১১এন মান ২.৪ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে সীমিত মাত্রায় ব্যবহার করা হতো।
বর্তমানে দৈনন্দিন ব্যবহৃত খুব বেশি যন্ত্র ৫ গিগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহার করে না। ব্লুটুথ ডিভাইস, টেলিফোনসহ মাইক্রোওয়েভ ওভেন, কোনো কিছুই এই মাত্রা ব্যবহার করে না। যে কারণে তরঙ্গ কম বাধাগ্রস্ত হয়। আবার দেয়ালের পুরুত্বের কারণে ৫ গিগাহার্টজ বাধার মুখে পড়ে, তখনো এই তরঙ্গে দ্রুত গতি পাওয়া যায়। বাড়ির দেয়ালে ৫ গিগাহার্টজের সংকেত বাধার কারণে প্রতিবেশীর ঘরের ওয়াই–ফাই তরঙ্গে হস্তক্ষেপ কম হয়। এসব কারণে বলা যায়, ২.৪ গিগাহার্টজের চেয়ে ৫ গিগাহার্টজ উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির মাত্রা।