মৃত্যুর ৭ মাস পর সহকারীর মরদেহ উত্তোলনের খবরে যা বললেন তানজিন তিশা
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলিতে মারা যান অভিনয়শিল্পী তানজিন তিশার সহকারী আল আমিন। মৃত্যুর সাত মাস পার হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রয়োজনে আল আমিনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজের নেতৃত্বে এবং উত্তরা পশ্চিম থানা ও শ্রীনগর থানা-পুলিশের তত্ত্বাবধানে শ্রীনগর উপজেলার বালাসুর কাশেমনগর কবরস্থান থেকে আল আমিনের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। মৃত্যুর সাত মাস পর আল আমিনের মরদেহ উত্তোলনের খবরে মর্মাহত তানজিন তিশা।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার উত্তরায় গুলিতে নিহত হন আল আমিন। পরে তাঁকে উত্তরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তী সময় ময়নাতদন্ত ছাড়াই ২০ জুলাই শ্রীনগর উপজেলার কাশেমনগর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। ঘটনার চার মাস পর ডিসেম্বরে নিহত ব্যক্তির বড় ভাই বাদল খলিফা বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন। এরপর আল আমিনের বাবা আইয়ুব খলিফার সম্মতিতে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
আল আমিনের মরদেহ উত্তোলনের খবরটি শোনার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তানজিন তিশা।
তিনি লিখেছেন, ‘আল আমিন শুধুমাত্র সহকারী নয়, সে আমার ভাই, যে আমার সাথে পাঁচটি বছর ছিল। যে ছিল নিষ্পাপ একটি ছেলে এবং সে জুলাই ও আগস্টের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়। সাত মাস পর আল আমিনের মরদেহ কবর থেকে ওঠানোর মতো নির্মম বিষয়টি আমি মোটেও সমর্থন করছি না। এই কর্মের মাধ্যমে কী লাভ হবে? শুধুমাত্র ওর আত্মাটা কষ্ট পাচ্ছে। পুরো বিষয়টা আমি জানার পর বিষয়টি আমার কাছে মেনে নেওয়া অনেক কষ্টদায়ক। এর পেছনে যে বা যারা জড়িত, তারা কোন উদ্দেশ্যে এই কাজটি করেছে, আমি চিন্তা করে খুবই হতবাক বিষয়টি নিয়ে। ভাইয়া তুই ভালো থাকিস।’
এদিকে আল আমিনের মৃত্যুর খবর শোনার পর সাত মাস আগে প্রতিক্রিয়ায় তিশা জানিয়েছিলেন, আল আমিন যেমন তানজিন তিশাকে নিয়ে ভাবতেন, তেমনি তিশারও তাঁকে নিয়ে পরিকল্পনা ছিল। ফেসবুক পোস্টে সে কথাই তুলে ধরে লিখেছিলেন, ‘আল আমিন সারাটা দিন আমার বড় একটা ছায়ার মতো আমার পাশে বসে থাকত। আমার কত পরিকল্পনা ছিল ওকে নিয়ে! ওকে ড্রাইভিং শেখাব! জোর করে বলতাম, পড়াশোনাটা নিয়মিত করতে, পরীক্ষাটা দিতে। কত বকা দিয়েছি, আবার একটু পর ঠিকই বোঝাতাম, আবার মন খারাপও করে থাকত।’