কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নাসির মোহাম্মদ ডেইল এলাকার পশ্চিমে সাগর পাড়েছবি: সংগৃহীত

মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ঠিকাদারের তিনটি খননযন্ত্র ও চারটি ট্রাক্টর পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এলাকায় কর্মরত দুজন ঠিকাদারের খননযন্ত্র ও ট্রাক্টর পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের নাসির মোহাম্মদ ডেইল এলাকার পশ্চিমে সাগরপাড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত তিনটি খননযন্ত্র ও মাটি বহনের কাজে ব্যবহৃত চারটি ট্রাক্টর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া বালুভর্তি করার জন্য আনা অন্তত চার হাজার জিও ব্যাগ লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। পাশাপাশি দুর্বৃত্তরা মারধর করে ছয়জন পাহারাদারের কাছ থেকে ছয়টি মুঠোফোনের সেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষের একটি অফিস ও একটি টাওয়ার নির্মাণের জন্য দুই মাস আগে কাজ পায় তাজ এন্টারপ্রাইজ ও জাহানারা ট্রেডার্স নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাজ এন্টারপ্রাইজের পাহারাদার নুর হোসাইন বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল রাতে তিনিসহ তাঁর পাঁচ সহকর্মী বন্দর কর্তৃপক্ষের নির্মাণকাজে পাহারা দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে দিবাগত রাত তিনটার দিকে একদল মুখোশধারী দুর্বৃত্ত তাঁদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা মারধর করে তাঁদের কাছ থেকে ছয়জনের মুঠোফোন সেট নিয়ে যায়। এ সময় তারা জ্বালানি তেল ঢেলে খননযন্ত্র ও ট্রাক্টরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া দুর্বৃত্তরা যাওয়ার সময় অন্তত চার হাজার খালি জিও ব্যাগ লুট করে নিয়ে যায়।

খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান মহেশখালীর মাতারবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত উপপরিদর্শক রাইটন দেব। প্রথম আলোকে রাইটন দেব বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আগুন দিয়ে দুর্বৃত্তরা তিনটি খননযন্ত্র ও তিনটি ট্রাক্টর পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা পাহারাদারদের মারধরও করেছে। এই ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তা বের করার চেষ্টা চলছে।’

তাজ এন্টারপ্রাইজের সহকারী ঠিকাদার ও ধলঘাট ইউপি সদস্য জমির উদ্দিন বলেন, দুই মাস ধরে পাঁচটি খননযন্ত্র ও ছয়টি পাওয়ার ট্রাক্টর দিয়ে মাতারবাড়ী বন্দর কর্তৃপক্ষের অফিসের জন্য ডাইক (বাঁধ) ও টাওয়ার নির্মাণের কাজ চলছে। ডাইকের পাশে বসানো হচ্ছে জিও ব্যাগ ও ব্লক। কিন্তু নির্মাণকাজের শুরু থেকে স্থানীয় ধলঘাট ইউপি চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহসহ আরও কয়েকজন প্রভাবশালী লোকজন নানাভাবে কাজে বাধা ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এই ঘটনার পেছনে তাঁদের হাত থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও ধলঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহকে পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন আতাউল হাকিম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাঁকে কেউ কিছু জানায়নি। এরপরও এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কাইছার হামিদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তা বের করার চেষ্টা চলছে।