বিসিবি প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মিডল্যান্ড ব্যাংকের ব্যাখ্যা
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে থাকা এফডিআরের ২৫০ কোটি টাকা অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ডে সরিয়ে নেয়া নিয়ে গুঞ্জন চলছিল বেশ কয়েকদিন ধরে। যা নিয়ে ২৬ এপ্রিল (শনিবার) নিজেদের ব্যাখ্যা দিয়েছে বিসিবি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা জানিয়েছে, আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টাকে সামনে রেখেই তারা পুরনো অ্যাকাউন্ট থেকে সরিয়ে অন্য ব্যাংকের অ্যকাউন্টে সরিয়ে এনে পূনঃ বিনিয়োগ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিহ্নিত ‘গ্রিন’ ও ‘ইয়েলো’ তালিকাভুক্ত ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে এনেছে বিসিবি। বাংলাদেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে আর্থিক বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুন : ২৫০ কোটি টাকা অন্য ব্যাংকে সরিয়ে নেয়া নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল বিসিবি
বিসিবির এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের অন্যতম বেসরকারি ব্যাংক ‘মিডল্যান্ড ব্যাংক’। তাদের মতে বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘ফারুক আহমেদের ২৫০ কোটি টাকা সরানো বিষয়ে বিসিবির ব্যাখ্য’- শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। যেখানে মিডল্যান্ড ব্যাংকে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। যা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। মিডল্যান্ড ব্যাংক এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে।
বিসিবি তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লিখেছে, ‘আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে বিসিবির বোর্ড তার ব্যাংকিং সম্পর্কগুলো পুনর্মূল্যায়ন করেছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ‘গ্রিন’ ও ‘ইয়েলো’ তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেনে যুক্ত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে ২৩৮ কোটি টাকা ‘গ্রিন’ ও ‘ইয়েলো’ তালিকার ব্যাংকগুলোতে পুনর্বিনিয়োগ করা হয়েছে।’
গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে মিডল্যান্ড ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ৮টি গ্রিন জোনের ব্যাংকের মধ্যে অন্যতম একটি ব্যাংক হলো মিডল্যান্ড ব্যাংক। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত চতুর্থ প্রজন্মের একমাত্র ‘গ্রিন’ জোনে তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও বিসিবি মিডল্যান্ড ব্যাংকে রাখা আমানত পূর্ব নির্ধারিত সময়ের আগে (প্রি-ম্যাচিউর এনক্যাশমেন্টের মাধ্যমে) উত্তোলন করে এবং তা অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করে।
মিডল্যান্ড ব্যাংক দাবি করছে, ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে মূলধনের পর্যাপ্ততা, সম্পদের গুণগত মান, মুনাফা ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতার সকল সূচকে সন্তোষজনক অবস্থানে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রেখে পরিচালিত হচ্ছে মিডল্যান্ড ব্যাংক। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের এনপিএল অনুপাত ছিল ৩.৭৮% এবং মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত ছিল ১৬.৭৮%, যা ন্যূনতম প্রয়োজনীয় ১২.৫০% অনুপাতের তুলনায় অনেক বেশি।’
মিডল্যান্ড ব্যাংক দাবি করছে, ‘বিসিবি প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের মাধ্যমে মিডল্যান্ড ব্যাংকের ভাবমূর্তি ও সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের উপর আঘাত হানা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।’
প্রতিবাদ লিপিতে ব্যাংকটি জানিয়েছে, এই ব্যাংকে জমা রাখা আমানত বিসিবি চাহিবামাত্র দিয়ে দেয়া হয়েছে। যা শক্তিশালী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব। তারা লিখেছে, ‘মিডল্যান্ড ব্যাংকে রাখা বিসিবির আমানত, বিসিবির পক্ষ থেকে চাহিবামাত্র পূর্ব নির্ধারিত সময়ের আগে প্রদান করা হয়েছে, যা একটি শক্তিশালী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই সম্ভব।’
‘বিসিবির ব্যাখ্যায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, ব্যাংকিং সম্পর্ক পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে তাদের স্থায়ী আমানত থেকে মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাংকে বেশ কিছু গ্রাহকের আমানত ফেরত না পাওয়ার ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, উচ্চ মুনাফার আশায় কিছু গ্রাহক ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকে টাকা রেখেছিলেন। বিভিন্ন পত্রিকায় এই ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মিডল্যান্ড ব্যাংক এক্ষেত্রে সবসময়ই অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে তার তহবিল ব্যবস্থাপনা করে থাকে, যাতে গ্রহকের আমানত চহিবামাত্র যে কোন সময়ে বিনা নোটিশে প্রদান করতে পারে।’
সর্বশেষ গণমাধ্যমের কাছে মিডল্যান্ড ব্যাংক অনুরোধ জানিয়েছে, সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রকৃত অবস্থা জেনে যেন তারা প্রকাশ করে। সে সঙ্গে তারা দাবি করেছে, মিডল্যান্ড ব্যাংকে জড়িয়ে যে সব মিডিয়া ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ সংবাদ প্রকাশ করেছে, সে সংবাদ যেন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।