মৌলভীবাজারে ‘বিনা লাভের বাজারে’ ভিড়, ক্রেতাদের মুখে হাসি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর, ২০২৪

‘বিনা লাভের বাজারে’ ভিড় করেছেন ক্রেতারা, যাঁর যাঁর পছন্দ ও চাহিদামতো বিভিন্ন ধরনের সবজি কিনে নিয়েছেন। কম দামে সবজি কিনতে পেরে ক্রেতাদের মুখে হাসি।
আজ মঙ্গলবার মৌলভীবাজার শহরের চৌমোহনা চত্বরে সবজির ‘বিনা লাভের বাজার’ চালু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া বিনা লাভের এই বাজারের সব সবজি দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
সবজি কেনার পর হৃদয় বাগমার নামের একজন ক্রেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এক কেজি ভেরেন্ডি (ঢ্যাঁড়স) ও এক কেজি ঝিঙে কিনেছি ৪০ টাকা করে। বাজারে এগুলোর দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আমার বেশ টাকা সাশ্রয় হয়েছে।’
বেলা ১১টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের চৌমোহনা চত্বরে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারের জন্য চত্বরের নির্ধারিত স্থানে সবজি ঘিরে হুমড়ি খেয়ে আছেন অনেক নারী-পুরুষ ক্রেতা। টেবিলের ওপর সাজানো সবজি ক্রেতাদের ভিড়ে সড়ক থেকে দেখার উপায় নেই। টেবিলের কাছে দাঁড়িয়ে পছন্দের সবজি কিনছেন। উদ্যোক্তারাই সবজি বিক্রি করছিলেন। তাঁদের দম নেওয়ার সুযোগ নেই। ওজন মাপা হয়ে গেলেই দাম চুকিয়ে সবজি সঙ্গে করে ভিড় থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। কিছু হয়তো আগে থেকে এই বাজারের কথা জানতেন, অনেকে জানতেন না। পথচারীদের অনেকে ভিড় দেখে খোঁজ নিচ্ছেন, তারপর কিনতে দাঁড়িয়ে পড়ছেন। বিনা লাভের বাজারের স্লোগান হচ্ছে, ‘আসুন, যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু ক্রয় করি’।
নূর আলম নামের একজন ক্রেতা জানান, তিনি ৪০ টাকা দিয়ে একটি লাউ কিনেছেন, একই আকারের লাউ গতকাল সোমবার স্থানীয় বাজার থেকে ১০০ টাকায় কিনেছেন। ঝিঙে, পটোল কিনেছেন ৪০ টাকা করে প্রতি কেজি।
বিনা লাভের বাজারের উদ্যোক্তাদের সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন থেকে সবজিসহ জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। ক্রেতাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে এই বিনা লাভের বাজারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ সকালে স্থানীয় আড়ত থেকে ৫০ হাজার টাকার বিভিন্ন জাতের সবজি পাইকারি দরে কিনে নিয়ে আসা হয়েছে। সবজিগুলো পাইকারি দরেই বিক্রি করা হয়েছে। পাইকারি দরে বিক্রি করায় ক্রেতারা বাজারের চেয়ে কম দামে কিনতে পেরেছেন। সবজির মধ্যে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৩০ টাকা, ডাঁটা (ডুগি) ২৫ টাকা, লালশাক ২৫ টাকা, লাউশাক ২৫ টাকা, শসা ৩০ টাকা, আলু ৫০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৫৫ টাকা, বেগুন (গোল) ৬০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা (পৈটা) ২৫ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, ধনেপাতা ১০০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪৫ টাকা, কুমড়া ৩০ ও লাউ ৩০ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে। লেবুর হালি ছিল ২০ টাকা। আপাতত এক সপ্তাহ বাজার চালু রাখার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি জাকারিয়া ইমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান বাজারে জিনিসের দাম বেশি। আমরা আড়ত থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে এনে পাইকারি দরেই বিক্রি করছি। ভাড়াটা আমরা পকেট থেকে দিচ্ছি। আপাতত এক সপ্তাহ বাজার চালু রাখার চিন্তা আছে। পরে পরিস্থিতি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অপর প্রতিনিধি তানজিয়া শিশির প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুর একটার মধ্যে আমাদের সব সবজি বিক্রি হয়ে গেছে। আগামীকাল সকাল নয়টা থেকে পৌরসভা চত্বরে বাজার বসবে। যত সময় সবজি থাকে, ততক্ষণ বিক্রি করা হবে।’