Advertisement

জলকামান ব্যবহার করে ৩১ ঘণ্টা পর শ্রমিকদের সরিয়ে দিল পুলিশ

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর, ২০২৪

বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করা শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল মোড়েছবি: প্রথম আলো
বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করা শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল মোড়েছবি: প্রথম আলো

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল মোড়ে নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করা শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা।

এতে প্রায় ৩১ ঘণ্টা পর মহাসড়কটিতে যান চলাচল শুরু হয়। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানা চালু ও বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা এ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন।

আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা জানান, এক মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রেখে দুই মাস আগে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এতে টানা তিন মাস ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমিকেরা। এর জেরে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও বকেয়া বেতনের দাবিতে সোমবার সকাল ১০টার দিকে শ্রমিকেরা আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় জড়ো হয়ে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাতেও তাঁরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। আজ মঙ্গলবার সকালে আরও অনেক শ্রমিক আন্দোলনে যোগ দেন। পরে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে পুলিশ জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ ও আশুলিয়া থানা-পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন সময় বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকেরা সড়ক ছাড়বেন না বলে জানান। এতে নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও যাত্রীরা।

আজ মঙ্গলবার শ্রমিকদের জানানো হয়, কারখানার মালিকের বোন, কারখানার ডিএমডিকে আইনের আওতায় এনেছে যৌথ বাহিনী। এ ছাড়া বাকিদের আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনে কারখানা বিক্রি করে বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়। এ সময় শ্রমিকদের একটি পক্ষ সড়ক ছেড়ে কারখানার সামনে অবস্থান নিতে রাজি হলেও অপর একটি পক্ষ সড়ক ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। শ্রমিকেরা এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করেন।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক অবরোধকারী শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সবাই সহানুভূতিশীল। তাঁদের দাবি পূরণের পদক্ষেপ হিসেবে কারখানার মালিকের বোন, কারখানার ডিএমডিকে আইনের আওতায় এনেছে যৌথ বাহিনী। এ ছাড়া প্রয়োজনে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কারখানার মালামাল ও কারখানা বিক্রি করে বকেয়া আদায়ের ব্যবস্থা করার বিষয়টি শ্রমিকদের জানানো হয়। একটি পক্ষ বিষয়টি মেনে নিলেও অপর একটি পক্ষ সড়ক ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায়।

ওসি বলেন, নিরীহ শ্রমিকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে একটি পক্ষ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। এ ছাড়া জনদুর্ভোগের বিষয়টি চিন্তা করে একপর্যায়ে জলকামান ব্যবহার করে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর নবীনগর থেকে চন্দ্রাগামী সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

Lading . . .